বৃহস্পতিবার, ৩ মে, ২০১২

লাদেনের বাড়ি ভেঙে হুমকির মুখে ইউসুফজাই


লাদেনের বাড়ি ভেঙে হুমকির মুখে ইউসুফজাই

তারিখ: ০৩-০৫-২০১২

prothom-alojobs news details small ad
শাকিল আহমদ ইউসুফজাই
শাকিল আহমদ ইউসুফজাই
পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের বাড়ি ভাঙার পেছনে যাঁর ভূমিকা রয়েছে, তিনি হলেন শাকিল আহমদ ইউসুফজাই। বাড়িটি ভেঙে এখন তালেবান জঙ্গিদের কাছ থেকে প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন তিনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও নিজের ভূমিকা নিয়ে গর্ববোধ করেন ইউসুফজাই।
উঁচু সীমানাপ্রাচীর দেওয়া তিনতলা ওই বাড়িতে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা বিন লাদেন অন্তত ছয় বছর আত্মগোপনে ছিলেন বলে ধারণা করা হয়। গত বছরের ২ মে রাতে সেখানে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর অভিযানে নিহত হন বিন লাদেন। ফেব্রুয়ারিতে বাড়িটি ভেঙে ইট, টালি ও অন্যান্য সামগ্রী অন্যত্র সরিয়ে নেন ইউসুফজাই। এ জন্য সরকারকে তিনি চার লাখ রুপি দিয়েছেন।
৪৭ বছরের ইউসুফজাই দৃঢ়চেতা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, তালেবান জঙ্গিরা তাঁকে হুমকি দিয়ে বেশ কয়েকটি চিঠি পাঠিয়েছে। এসব আমলে নেননি তিনি। বাড়িটির সামগ্রী বিক্রি করে কিছু অর্থ উপার্জন করবেন। এর চেয়েও বড় কথা, দেশ একটা কলঙ্কজনক চিহ্ন মুছে দিয়েছে— এই ভেবে গর্ববোধ করেন। ইউসুফজাই বলেন, ‘আমি ভীত নই। তবে মাঝেমধ্যে মনে হয়, আমার পরিবারের সদস্যদের বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী খুব সন্ত্রস্ত থাকে। কোনো কারণে আমার বাড়ি ফিরতে দেরি হলে সে ভাবে, আমাকে অপহরণ কিংবা হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, আমি দেশের স্বার্থে কাজ করেছি। ওই বাড়িটি নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে এই বার্তা পাঠাতে পেরেছি যে আমরা সন্ত্রাসবাদ সমর্থন করি না।’ 
লাদেনকে হত্যার ঘটনা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। এক বছর পরও এই রহস্যের কিনারা হয়নি। বরং এত দিনে নানা তত্ত্ব ডালপালা ছড়িয়েছে। অ্যাবোটাবাদের বাসিন্দাদের অনেকে মনে করেন, বাড়িটিতে লাদেন আদৌ ছিলেন না। 
ইউসুফজাই বলেন, ‘আমি নিশ্চিত নই, বাড়িটিতে বিন লাদেন থাকতেন। তবে বাড়ির নকশা ও অন্যান্য সামগ্রী দেখে আবার দ্বিধা জাগে মনে। হতেও পারে ছিলেন তিনি।’
ইউসুফজাই বলেন, ওই বাড়ির জঞ্জালের স্তূপ সরাতে ছয়টি ট্রাক ব্যবহার করতে হয়েছে। ১২ টন জঞ্জাল সরাতে মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয়করতে হয়েছে। ওই বাড়ির মেঝের টালি, ইট, পানির পাইপ, তারসহ নানা সামগ্রী স্থানীয় একটি কলেজের গুদামঘরে রেখেছেন তিনি।
ইউসুফজাই বলেন, ওই বাড়ির সীমানা থেকে আনা একটি কমলা ও জলপাইয়ের চারা তিনি ওই কলেজে দান করবেন।
অ্যাবোটাবাদের ওই বাড়ির ভিটায় এখন স্থানীয় ছেলেরা ক্রিকেট খেলে। জামাল-উদ-দিন (১২) বলে, ‘এই এলাকার সবাই চায়, এই জায়গায় খেলার মাঠ করা হোক। আমরা এখানে ক্রিকেট খেলতে চাই।’ এএফপি।

কোন মন্তব্য নেই: